দেশব্যাপী কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন ৭ দিনের গনটিকা সময়সূচী প্রকাশ। ৭ আগস্ট থেকে ১২ই আগস্ট শুরু হচ্ছে এক কোটি নাগরিককে টিকাদানের মিশন। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য কম সময়ে বেশি সংখ্যক জনগোষ্ঠীকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে আগামী ৭ আগস্ট থেকে বিশেষ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ৬-৭ দিনে এক কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে সরকার।
ক্যাম্পেইন শেষ হলেও চলমান টিকাদান কার্যক্রমের আওতায় প্রতি মাসে এক কোটি মানুষকে কোভিড প্রতিষেধক দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এ হিসাবে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে পাঁচ কোটি মানুষ ভ্যাকসিনের আওতায় আসবে।
দেশব্যাপী কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন ও গনটিকা সময়সূচী
গনটিকা সম্পর্কে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম মোহাম্মদ খুরশীদ আলম শহুরে ডট কম’কে জানান, ছয়দিনের ক্যাম্পেইন শেষে স্বাভাবিক টিকা কার্যক্রম চলবে। আগামী মাসে আবার ক্যাম্পেইন করে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়া হবে।
কিভাবে গনটিকা ক্যাম্পেইন করা হবে
শিশুদের টিকাকরণের ইপিআই কর্মসূচির হেলথ অ্যাসিসটেন্টরাই ছয় দিনের বিশেষ কার্যক্রমের সময় কোভিড-১৯ টিকা দেবেন।
এব্যাপারে বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিসটেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রবিউল ইসলাম খোকন- শহুরে ডট কম’কে বলেন, ক্যাম্পেইনে ভ্যাকসিন দেওয়ার বিষয়ে আমাদের প্রশিক্ষণ চলছে। দেশে এখন ১৫ হাজার হেলথ অ্যাসিসটেন্ট আছে, তারাই ভ্যাকসিন দেবেন। আর হেলথ অ্যাসিসটেন্টদের সহযোগীতা করবে ফ্যামিলি প্ল্যানিংয়ের কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীরা।
দেশে হেলথ অ্যাসিসটেন্টের ৫০ শতাংশ পদ খালি থাকায় কোভিড ভ্যাকসিনেশনে জনবল সংকট একটি চ্যালেঞ্জ মনে করছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
এব্যাপারে ডা. এ বি এম মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, “বৃষ্টির কারণে দুর্গম ও দুর্গত এলাকাতে মানুষ ভ্যাকসিন নিতে আসেবে কিনা- তা নিয়ে আমাদের শঙ্কা রয়েছে। তবে আমরা টার্গেট করছি স্কুলগুলোতে বেশি সেন্টার করার যাতে বৃষ্টিতেও ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমে সমস্যা না হয়।”
“ভ্যাকসিন পাওয়া সাপেক্ষে আবারো ক্যাম্পেইন করার পরিকল্পনা রয়েছে। ক্যাম্পেইন ছাড়াও প্রতি মাসে এক কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে ভ্যাকসিন পাওয়ার ওপরই সবকিছু নির্ভর করবে। তবে ঠিক সময়ে ভ্যাকসিন পাওয়ার বিষয়ে আমরা আশাবাদী,” যোগ করেন তিনি।
আরও দেখুনঃ COVID-19 Vaccine Gono Tika Schedule in Bangladesh
ক্যাম্পেইনের আওতায় কোন দেশের কোন ভ্যাকসিন দেয়া হবে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাতে এখন সিনোফার্মের ৫৫.৭৬ লাখ ডোজ, মর্ডানার ৪৭.৩৫ লাখ, ফাইজারের ৫০ হাজার ও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ১৩ লাখ ডোজ টিকা রয়েছে। ক্যাম্পেইনের আওতায় শহরে মর্ডানা ও গ্রামে সিনোফার্মের ভ্যাকসিন দেয়া হবে।

দেশব্যাপী কোথায়, কখন ও কিভাবে টিকা গ্রহণ করবেন ?
- আগামী ৭ থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে নিদ্ধারিত কেন্দ্রে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে বেলা তিনটা পর্যন্ত টিকাদান চলবে।
- টিকা পেতে অগ্রাধিকার পাবেন নারী ও বয়োবৃদ্ধ নাগরিকগণ।
- যাদের বয়স ১৮ বছর বা বেশি তাদের টীকা নেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হচ্ছে।
- প্রথম ২ ঘণ্টা শুধু নারী ও যেসকল পুরুষের বয়স ৫০ বছর বা তার বেশি তাদের টীকা দেওয়া হবে।
- অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন না করলেও জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে ক্যাম্পেইনে ভ্যাকসিন নেওয়া যাবে।
- সুরক্ষা : কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের নিবন্ধন করা থাকলে বা আগে এক ডোজ দিয়ে থাকলে সেই আগের তারিখে আবেদন করা জায়গায় গিয়ে টীকা দিন।
- টিকা কার্ড সংগ্রহ লিঙ্ক
- টিকা সনদ সংগ্রহ লিঙ্ক
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে করণীয়
- ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে ৩০ মিনিট টীকা কেন্দ্রে অপেক্ষা করুন।
- ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে যে কোন শারীরিক সমস্যা হলে টিকাদান কর্মকর্তার কে সব বলুন।
- বেশি সমস্যা হলে কাছাকাছি থাকা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগাযোগ করুন।
দেশব্যাপী কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন ও গনটিকা সময়সূচী ছবি। -দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড
কোন কোন জেলাতে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দেওয়া হবে ?
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিকল্পনা রয়েছে, ক্যাম্পেইনের আওতায় সারাদেশের ৬৪ জেলার গ্রামাঞ্চল, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা মিলিয়ে ১৫,২৮৭টি ওয়ার্ডে ৬ দিনে এক কোটি ৩৪ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়ার।
গ্রামীণ কেন্দ্রগুলোতে প্রস্তুতির তোড়জোর
বিশেষ টিকা কর্মসূচি শুরু করতে এরইমধ্যে তোড়জোর শুরু হয়েছে গ্রামীণ জনপদে। কর্মসূচির জন্য ভ্যাকসিন এরইমধ্যে উপজেলায় পৌঁছে গেছে। ক্যাম্পেইনে টিকাদানে যারা যুক্ত থাকবেন তাদের ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমে মানুষকে সম্পৃক্ত করতে উপজেলার জনপ্রতিনিধি, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে মিটিং করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
পোস্ট পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ ফলো দিয়ে রাখুন। সকলের সাথে শেয়ার করুন।